CEO West Bengal: ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী দপ্তর ঘোষণা করেছে, আগস্ট মাস ২০২৫ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। যারা নতুন ভোটার তালিকায় নিজের নাম তুলতে চান বা পুরনো তথ্য আপডেট করতে চান, তাঁদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হতে চলেছে। এই নিবন্ধে আলোচনা করা হলো—আপনার কী নথি লাগবে, কাদের জন্য ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রমাণ হিসেবে জরুরি এবং কীভাবে আপনি সেটি অনলাইনে ডাউনলোড করবেন।
২০২৫ সালের ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি
পশ্চিমবঙ্গের CEO (Chief Electoral Officer) দপ্তর কর্তৃক জানিয়েছে, এবার প্রত্যেক বুথ লেভেল অফিসার (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার আদেশ পেয়েছেন। যাঁদের বয়স ১লা জুলাই ২০২৫ অনুযায়ী ১৮ বছর বা তার বেশি, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন নতুনভাবে নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন নেওয়া হবে।
এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—আপনার জন্ম তারিখ প্রমাণ এবং পূর্ববর্তী নাগরিকত্বের রেকর্ড, যেখানে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে জানা যায় ।
জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র লাগবে আপনার বয়স অনুযায়ী
ভারতীয় নির্বাচন কমিশন জন্ম তারিখ প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নথি চেয়েছে। তবে যাঁদের জন্ম ভিন্ন ভিন্ন সময়ে হয়েছে, তাঁদের জন্য ভিন্ন নিয়ম আছে।
যদি আপনার জন্ম ১লা জুলাই ১৯৮৭ সালের আগে হয়ে থাকে
এই ক্ষেত্রে, আপনি ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য নিম্নলিখিত যেকোনো একটি নথি দিতে পারবেন:
- ১০ম শ্রেণির সার্টিফিকেট
- জন্ম সনদ
- প্যান কার্ড
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
তবে, যদি আপনার নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থেকে থাকে, তাহলে সেটি আলাদা করে জন্ম প্রমাণ হিসেবে গৃহীত হবে বলে জানা যায় ।
যদি আপনার জন্ম ১লা জুলাই ১৯৮৭ থেকে ১লা জানুয়ারি ২০০২-এর মধ্যে হয়ে থাকে
এই বয়সসীমার নাগরিকদের জন্য প্রয়োজন:
- জন্ম প্রমাণপত্র (যেকোনো স্বীকৃত সরকারি নথি)
- বাবা বা মায়ের ভোটার পরিচয়পত্র বা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম থাকা
যদি আপনার জন্ম ১লা জানুয়ারি ২০০২ সালের পরে হয়ে থাকে
এই ক্ষেত্রে, আপনাকে এবং আপনার পিতা-মাতাকে উভয়কে জন্ম তারিখের প্রমাণ জমা দিতে হবে। অথবা, যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম থাকে, তাও গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানা যায় ।
২০০২ সালের ভোটার তালিকা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
- অনেক নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন বা শিক্ষাগত প্রমাণপত্র এখনো নেই
- ২০০২ সালের ভোটার তালিকা একটি সরকারি স্বীকৃত রেকর্ড
- এতে নাম, বাবার নাম, বয়স, লিঙ্গ, ঠিকানা এবং ছবি সহ তথ্য থাকে
- নাগরিকত্ব প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন সরকারি কাজে এটি গ্রহণযোগ্য হবে
কীভাবে ডাউনলোড করবেন ২০০২ সালের ভোটার তালিকা? দেখেনিন
২০০২ সালের তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এখনো পাওয়া যাচ্ছে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—
ধাপ ১:
এর জন্য প্রথমে যান পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে:
👉 https://ceowestbengal.nic.in/roll_dist
ধাপ ২:
“Electoral Roll” বা “Voter List” অপশন সিলেক্ট করুন।
ধাপ ৩:
আপনার জেলা (District) নির্বাচন করুন। যেমন: উত্তর ২৪ পরগনা / হাওড়া / দার্জিলিং বা অন্য
ধাপ ৪:
এর পর আপনার বিধানসভা কেন্দ্র (Assembly Constituency) সিলেক্ট করুন। যেমন: বেহালা পূর্ব, বাগনান, রানিগঞ্জ বা অন্য ইত্যাদি।
ধাপ ৫:
এরপর আপনার পোলিং স্টেশন নম্বর দিন এবং “Final Roll” বিকল্পে ক্লিক করুন।
ধাপ ৬:
এরপর ২০০২ সালের তালিকা PDF আকারে খুলে যাবে। আপনি এটি ডাউনলোড করে রাখতে পারেন বা প্রিন্ট করে জমা দেওয়ার সময় ব্যবহার করতে পারেন।
তালিকা না পেলে কী করবেন?
যদি এখনো আপনার বিধানসভা কেন্দ্রের তালিকা আপলোড না হয়ে থাকে, তাহলে কয়েকদিন অপেক্ষা করুন ঠিক হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, সকল কেন্দ্রের তালিকা খুব শীঘ্রই আপলোড করা হবে। প্রতিদিন ওয়েবসাইট চেক করুন বা স্থানীয় BLO-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
এই তালিকা কী কাজে লাগবে?
- জন্ম তারিখ ও নাগরিকত্ব প্রমাণ
- পুরনো ঠিকানা যাচাই
- নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশনে সহায়ক
- পরিবারের সদস্যদের নাম মিলিয়ে নেওয়ার সুযোগ
অতিরিক্ত টিপস দেখেনিন
- আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের পুরনো ভোটার কার্ড থাকলে তা সংগ্রহ করে রাখুন
- BLO যখন আসবেন, তাঁর রসিদ/স্লিপ/পরিচয়পত্র যাচাই করুন
- অনলাইনে আবেদন করতে চাইলে NVSP পোর্টাল ব্যবহার করতে পারেন
বর্তমানে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ২০০২ সালের তালিকা শুধু অতীত রেকর্ড নয়, বরং এটি আপনার নাগরিকত্ব ও পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিশেষ উপযোগী হবে। সময় মতো প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত রাখুন এবং এই সুযোগে নিজের নাম নিশ্চিত করুন তালিকায়।
প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে জুড়ে থাকুন। আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের খবর দিয়ে থাকি।